মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন ঐতিহাসিক দ্রষ্টব্য স্থান সমূহের মধ্যে নশিপুর রাজবাড়ী অন্যতম। মুর্শিদাবাদ ( লালবাগ ) শহরের প্রধান আকর্ষন হাজারদুয়ারী প্রাসাদ থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার উত্তরে এই নশিপুর রাজবাড়ী অবস্থিত। আজকের দিনে রাজবাড়ীর সমস্তটাই ঝাঁ চকচকে হলেও বিগত কয়েক বছর আগেও এমন ছিল না। নতুন আলোকে এই রাজবাড়ীকে জনসাধারণের সামনে তুলে ধরার সম্পূর্ণ কৃতিত্বই রাজবাড়ীর বর্তমান বংশধর সৌরেন্দ্রমোহন সিংহ ও স্থানীয় পাঁচজন যুবকের। অবলুপ্তির হাত থেকে ঐতিহাসিক নশিপুর রাজবাড়ি রক্ষার দায়িত্ব তারা কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন বলে মুর্শিদাবাদের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য রক্ষা করা সম্ভবপর হয়েছে। এছাড়াও নবাব বাহাদুর স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক চিত্রশিল্পী পঞ্চানন বাবুর অবদান একবাক্যে স্বীকার করতে হয়। তার শৈল্পিক হাতের যাদুতে এই রাজবাড়ী পরিপূর্ণতা লাভ করেছে। ইতিহাসের পাতায় কিন্তু এই বাড়ি অত্যাচারি দেবী সিংহের বাড়ি নামে খ্যাত। দেবী সিংহ ছিলেন বৃটিশ অধীন বাংলার রাজস্ব বিভাগের একজন দেওয়ান। তার অত্যাচারে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পায়। এর ফলে তিনি ইংরেজ কোম্পানির আশীর্বাদপুষ্ট হন। অতঃপর প্রচুর ধনসম্পদ করায়ত্ত হওয়ায় তিনি জমিদারী ক্রয় করেন। তবে দ্বিতীয় হাজারদুয়ারী হিসেবে পরিচিত এই নশিপুর রাজবাড়ী কিন্তু দেবী সিংহের দ্বারা তৈরি নয়। দেবী সিংহের উত্তরপুরুষ রাজা কীর্তি চাঁদ বাহাদুর ১৮৫৬ খ্রীস্টাব্দে হাজারদুয়ারী প্রাসাদের অনুকরণে এই রাজবাড়ী তৈরী করেন যা গর্বের পালক হয়ে আজও শোভা পাচ্ছে ঐতিহাসিক মুর্শিদাবাদ শহরের মুকুটে।
লেখা : অনিন্দ্য সরকার।
Picture source : The current descendants of King Devi Sing.